Blog

ভালোবেসে অতীতে সবাই পরস্পরকে চিঠি লিখতো। আর বিচ্ছেদ এসে দু’জন মানুষের মাঝে আর্মচেয়ার পেতে বসে গেলে, সবার আগে তারা একে অন্যকে ফিরিয়ে দিতো সেই সাদাকালো অক্ষরের শব্দগুলো। যেন সেগুলো দিয়ে দিলেই এতদিনের সবকিছু মুছে যাবে। যাবে বিলীন হয়ে।
কিন্তু, মঙ্গল গ্রহে নেমে পড়া নভোচারী কিংবা আরও ডিজিটাল হতে থাকা দু হাজার বিশে; মানুষ আসলে কিছু ভুলতে কিংবা নতুন করে মনে রাখতে কী করতে পারে? মনোযোগী পাঠকের মতো পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা কৌতূহলী হয়ে পড়ে যাবে নাকি গোল্ড ফিস মেমোরি চিপ ধরে ভুলে যাবে সব? আনফ্রেন্ড, ব্লক!

নাকি লাবণ্য ধরে থাকা মায়া বিষাদ ছড়িয়ে; কোন এক রাতে শুরু করবে রেট্রোস্পেকটিভ সেরেমনি? মহামারীর মৃত্যু যেখানে অন্তহীন আলোর গভীরে ডানা ছড়িয়ে যায়, সেখানে বেঁচে থাকাকেই মনে হয় দারুণ প্রতিভা।

তবুও, তারপরেও… মধ্যরাতে দেয়ালের অরিগামি খোলা জানালা দিয়ে উড়ে আসা বাতাসে অপ্রস্তুত হয়ে কেঁপে কেঁপে উঠলে, টেবিলের বইগুলো অনুভূতি দেখার নীরব দর্শক হলে আর মেইলবক্সে পুরানো আবেগ উপচে পড়লে মনে হয়, সত্যিই যেন এই জীবনটাকে আবার পরিচিত সিনেমার মতো নতুন করে দেখে ফেলা যায়।

পৃথিবীতে বেঁচে থাকার যে উপলব্ধি, সেই উপলব্ধির আনন্দকে কীভাবে আরও দীর্ঘ করা যাবে, তা হয়তো আমরা আজও জানি না। তবে, যে পথচারীটি পাশ কাটিয়ে যাবার আগে অহেতুক হাসি দিয়ে যায়, যে সহপাঠি গভীর রাতে ফোন করে বলে ওঠে তার পুরানো ভুলগুলো আর খিলখিল করে হাসে, যে লেখাটি মনে করিয়ে দেয় উপেক্ষা পাবার পরেও কেউ একজন বিনা বাক্যব্যয়ে, অকপটে ছড়িয়েছিল ভালোবাসার নির্যাস…

তখন…তাদের সবার কথা ভাবতে ভাবতে কেন যেন এই অসহনীয় বেঁচে থাকাকে প্রথম প্রেমের মতো কোমল এবং তীব্র মনে হয়…

লেখাটি নিয়ে মন্তব্য প্রদান করুন।

Your email address will not be published. Required fields are marked *